সুদীপ ঘোষঃ আবার নিম্নচাপের ভ্রুকুটি বঙ্গোপসাগরে। আবার বৃষ্টিতে ভিজতে চলেছে দক্ষিণের জেলা গুলি। একের পর এক নিম্নচাপ সুখবৃষ্টি নিয়ে আসছে বঙ্গবাসী জন্য। গত সপ্তাহেই পর পর দুটো নিম্নচাপে ভেসেছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ। আবার নিম্নচাপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বাংলার আকাশে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে , বঙ্গোপসাগরের মায়ানমার ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে একটি নিম্নচাপ বলয় তৈরি হয়েছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশ , পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার দিকে ধেয়ে আসার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে ১৮ থেকে ২০আগস্ট আবার বৃষ্টিতে ভাসতে চলেছে দক্ষিণ বঙ্গ। আগামী ১৮ই আগস্ট ও ১৯শে আগস্ট দুই দিনই দক্ষিণবঙ্গের জেলা গুলিতে ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। আগামী আগস্টের ১৯ ও ২০ তারিখ রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়তে পারে। এমনকি এই দুইদিন রাজ্যের কোন কোন স্থানে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ অতি ভারী বৃষ্টিপাতও হতে পারে।
এই নিম্নচাপের কারণে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে হাওয়া অফিস এবং যারা ইতি মধ্যেই সমুদ্রে আছেন তাদের অতি তৎপর তীরে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টির কারণে কলকাতা ও শহরতলীর নিচু স্থানে জল জমতে পারে এবং রাজ্যের বন্যা কবলিত অঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এছাড়া উপকূলের জেলা গুলিতে জল উচ্ছ্বাস দেখা যেতে পারে। তাই প্রশাসনকে এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে আলিপুর ওয়েদার ডিপার্টমেন্ট। এর পাশাপাশি, দীঘা, মন্দারমনি, বকখালি ও মৌসুনি দ্বীপের মতো জনপ্রিয় সৈকত গুলিতে পর্যটকদের গতিবিধির উপর নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আলিপুর ওয়েদার অফিস।এই নিম্নচাপের বৃষ্টি চাষীভাইদের ধান রোপণ ও পাট পচাতে সাহায্য করবে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা। ঝড়- বৃষ্টির সময় অযথা বাড়ির বাইরে না যেতে, বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় দ্রুত গাড়ি না চালাতে এবং বজ্র-বিদ্যুতের সময় কৃষকবন্ধুদের মাঠে কাজ না করার পরামর্শ দিয়েছে কলকাতার হাওয়া অফিস।
জুন- জুলাইয়ের খরার আশঙ্কা উড়িয়ে আগস্ট মাসের একের পর এক নিম্নচাপ ক্রমেই বাংলার বৃষ্টির ঘাটতি কমাতে চলেছে। যদিও আগের দুই নিম্নচাপ ও ভরা কটালের ফলে নদী বাঁধ ভেঙে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অঞ্চলের পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়েছে। তবুও সুখবৃষ্টির স্বাদ পেয়ে খুশির হাওয়া এখন বাংলার চাষী মহলে । নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে ধান রোপণ, রোপিত ধান জমির পরিচর্যা, পাট পচানো ও সবজি চাষ। বিশেষজ্ঞদের মতে , যদি এই ভাবে একের পর এক নিম্নচাপ সাগরে ঘনীভূত হয়ে বাংলার দিকে আসতে থাকে, আগামী কিছু দিনেই বাংলার জুন- জুলাইয়ের বৃষ্টিপাতের ঘাটতি মিটে যাবে।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ