সুদীপ ঘোষঃ- টিকটিকির সাথে মানুষের একই ঘরে বাস। ঘরের লাইট দেখলেই পোকা খেতে লাইটের কাছে ছুটে আসে টিকটিকি। পোকা খেতে গিয়ে ব্যালেন্স হারিয়ে মাঝে মাঝে মানুষের গায়ে, খাবারে ও আসবাবপত্রে পড়ে যায়। দেখতে নিরীহ হলেও টিকটিকি দেখলেই অনেকেই খুব ভয় পান।
টিকটিকির দেহাংশ ও মল খাবারে পড়লে বিষক্রিয়া হয়ে মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে। টিকটিকি গায়ে পড়লে অনেকের আবার এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। তাই অনেকেই চায় বাড়ি থেকে টিকটিকি তাড়াতে।
এবার বাড়ির টিকটিকির সমস্যা বাড়িতেই মিটিয়ে ফেলুন নীচের সহজ কয়েকটি উপায়ে –
১. কাঁচা ডিমের খোসার গন্ধকে টিকটিকি ভয় পায়। এই গন্ধে টিকটিকির ইন্দ্রিয় দুর্বল হয়ে যায়। তাই এই গন্ধে টিকটিকি পালিয়ে যায় । সে জন্য টিকটিকির উৎপাত যেখানে বেশি সেখানে ডিমের খোসা রাখলে বা সুতো দিয়ে ঝুলিয়ে রাখলে টিকটিকি কমে যায়।
২. ময়ূরের পালক ঘরের মধ্যে রাখলে টিকটিকি ঘরে ঢুকতে ভয় পায়। ময়ূরের পালক বাজার থেকে এনে ঘরের মধ্যে রাখলেই টিকটিকির সমস্যার সমাধান। তাছাড়া, ময়ূরের পালক দেখতে সুন্দর তাই ফুলদানিতে সেটা রাখলে টিকটিকি তাড়ানোর সাথে ঘরের শোভাও বৃদ্ধি পায়।
৩.পেয়াঁজ ও রসুনের গন্ধ টিকটিকির সহ্য হয়না। পেয়াঁজ ও রসুনের মধ্যে থাকা সালফারের ঝাঁঝে টিকটিকি পালিয়ে যায়। তাই ঘর থেকে টিকটিকি দূর করতে হলে, দু- চারটে কাঁচা পেঁয়াজের টুকরো ও রসুনের কোয়া ছাড়িয়ে ঘরের মধ্যে রাখতে হবে। রসুন- পেঁয়াজের ভয়ে টিকটিকি ঘরে আসবে না।
৪. ন্যাপথালিন এর উগ্র গন্ধ পোকামাকড়ের মতো টিকটিকিও নিতে পারে না। তাই ঘরের টিকটিকির আস্থানায় এটি রেখে দিন। তবে বাড়ীতে বাচ্চা ও পোষ্য থাকলে ন্যাপথালিনের বল গুলো তাদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।
৫. গুড়াখু বা তামাকের গুঁড়োর সাথে কফি মিশিয়ে তাতে সামান্য জল দিয়ে পেস্ট করে ছোট ছোট বলের মতো করতে হবে। তারপর সেই বল দেওয়ালে চিপকে বা গেঁথে রাখলে টিকটিকি ঘরের মধ্যে আর আসবে না।
৬. বাড়ির রান্নার কাজে ব্যবহৃত গোলমরিচের সাথে অল্প শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে তাতে জল দিয়ে টিকটিকির আসার জায়গাতে ছিটালে বা স্প্রে করলে টিকটিকি আর ঘরের মধ্যে দেখা দেয়না ।
৭. তেজপাতা পুড়িয়ে সেই গন্ধ ঘরের চারিদিকে ছড়িয়ে দিলে টিকটিকির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তেজ পাতার বাজে গন্ধ টিকটিকির পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।
৮। টিকটিকি হল শীতল রক্তের প্রাণী। তাই টিকটিকি দেখলেই তার ওপর বরফ ও ঠান্ডা জল দিলেই টিকটিকি জমে যায়। পরের বার টিকটিকি আর ঘরের মধ্যে আসেনা।
৯। সবার শেষে, টিকটিকির হাত থেকে রক্ষা পেতে ঘরের দেওয়াল ও সিলিং পরিষ্কার রাখতে হবে। মেঝের মতোই নিয়মিত ঘরের দেওয়াল ও সিলিং- এ জীবাণুনাশক দিতে হবে।
১০। ঘরের জানালা ও ভেন্টিলেটারে মশার নেট লাগিয়েও টিকটিকির প্রবেশ বন্ধ করা যায়।