সুদীপ ঘোষ: ব্যাপক বৃষ্টির ঘাটতির মুখে পড়েছে বাংলা। বৃষ্টির অভাবে কৃষিকাজ নিয়ে ঘোর আশঙ্কায় বাংলার কৃষকরা। দক্ষিণবঙ্গে গ্রীষ্মকালীন রোদের উত্তাপ সঙ্গে ভ্যাপসা গরম। কিন্তু উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। তবে শুধু বৃষ্টি নয়, ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিল হাওয়া অফিস।
আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মৌসুমী অক্ষরেখা ও বঙ্গোপসাগর থেকে আগত অত্যধিক জলীয়বাষ্পের কারণে উত্তরবঙ্গ জুড়ে ২ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। আজ দার্জিলিং থেকে কুচবিহার সহ উত্তরের পাহাড়ি জেলা গুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে চলেছে তাই কমলা সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। আর দুই দিনাজপুর জুড়ে হলুদ সতর্কতার কারণ এই দুই জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা থাকছে।
আগামী কালও জলপাইগুড়ি, কুচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জুড়ে থাকবে কমলা সতর্কতা। ভারী বৃষ্টির কারনে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে কাল হলুদ সতর্কতা থাকছে দার্জিলিং, কালিংপঙ্গ, মালদা ও দুই দিনাজপুরে । এই জেলাগুলিতে মাঝারি থেকে দু এক জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা থাকছে।
আগামী ১লা আগস্টও দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কুচবিহার , জলপাইগুড়ি ও কালিম্পাং জেলা গুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কবার্তা জারি করেছে আলিপুর হাওয়া অফিস। আর ঐ দিন দিনাজপুরের বেশ কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। আগামী ২রা আগস্টও দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির বেশিরভাগ অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা রয়েছে। আর ঐ দিন উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
অতি বর্ষণে ধসের সম্ভবনা রয়েছে পাহাড়ি এলাকায়। বৃষ্টিতে নদীর জলস্তর বেড়ে বন্যা ও প্লাবন দেখা দিতে পারে তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে। নিচু এলাকাতে জল জমতে পারে এবং বৃষ্টিতে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে। তবে এই ব্যাপক বৃষ্টিতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ফসল ও ফুলের কৃষি জমি।
ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আবহাওয়া দপ্তর চাষী ভাইদের উদ্দেশ্যে পাকা ফসল দ্রুত কেটে খামারে তোলা, জমি থেকে জল নিকাশির আগাম ব্যবস্থা করা ও এখনই ফসলের উপর কীটনাশক ও আগাছা নাশক প্রয়োগ না করার মতো একাধিক পরামর্শ দিয়েছে। আর এই ভারী বৃষ্টির দিন গুলিতে দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালাতে ও বৃষ্টি-বজ্রপাতের সময় অযথা বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পরবর্তী নোটিশের দিকেও নজর রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত সারা দেশে বন্যা দেখা দিলেও বাংলা জুড়ে বৃষ্টির ব্যাপক ঘাটতি। কদিন তীব্র রোদের পর সম্ভাব্য বন্যার সম্মুখীন হতে পারে উত্তরবঙ্গ। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও দক্ষিণবঙ্গের জন্য এখনই ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়নি আবহাওয়া দপ্তর। ভারী বৃষ্টি ছাড়া পশ্চিমাঞ্চলের জেলা গুলির খরার আশঙ্কা এখনই মিটছে না তবে দক্ষিণবঙ্গে তীব্র গরমের মধ্যে বজ্রগর্ভ মেঘের কারণে কোন কোন জেলায় সাময়িক ঝড়- বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।