সুদীপ ঘোষঃ দীর্ঘ ৫ দিনের রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধের পর সরকারের প্রতিশ্রুতিতে উঠেছে কুড়মি জন সম্প্রদায়ের আন্দোলন। কুড়মি অর্থাৎ বেশিরভাগ মাহাতোদের তপশিলি জাতিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবীতে শুরু হয়েছিল এই আন্দোলন।
রাজ্য সরকারের কাছে বারবার আলোচনা- বৈঠকের পরও কুড়মিদের এস.টি. তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ রাজ্য সরকার নেয়নি বলে অভিযোগ তোলেন কুড়মি জনজাতি। তারই প্রতিবাদী রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তারা। নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পুরুলিয়ার কোস্তাউর ও মেদিনীপুরের খেমাশুলি রেল স্টেশন ও ৬ নং জাতীয় সড়ক জুড়ে আন্দোলন শুরু। সারা রাত দিন ধরে চলতে থাকে তাদের আন্দোলন। সেখানেই খাওয়া দাওয়া, কখন তাদের লোকসঙ্গীত, নৃত্য প্রদর্শনী ও স্লোগান চলতে তাকে। কুড়মি সমাজের এই আন্দোলনে পশ্চিমাঞ্চল ও কলকাতার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একের পর এক বাতিল হয় দক্ষিণ- পূর্ব রেলের প্যাসেঞ্জার ও এক্সপ্রেস ট্রেন। জাতীয় সড়কের উপর সারি সারি দাড়িয়ে পরে পণ্য পরিবহনকারী যানবাহন। পুজোর মুখে চরম ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
তাদের আন্দোলনের সমর্থন এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি – দুই এর খবর ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। প্রাচীন কুড়মি সমাজের দাবী পুনরায় বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আদিবাসী দপ্তরের সচিব অনিল কুমার ঝাকে চিঠি পাঠাতে বাধ্য হয় রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তর। এই দপ্তরের সচিব সঞ্চয় বানসাল রাজ্য সরকারের চিঠির সাথে কুড়মি সম্প্রদায়ের দাবী গুলির চিঠি সংযুক্ত করেন।
রাজ্য সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ পর সাময়িক আন্দোলন প্রত্যাহার করেন আন্দোলনরত কুড়মি জাতির মানুষজন। পঞ্চম দিনের মাথায় উঠে যায় তাদের রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ। তবে আগামী দিনে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার তাদের দাবী মেনে না নিলে তারা আবার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। আন্দোলন উঠে যাওয়ার পরই আসতে আসতে স্বাভাবিক হতে থাকে কলকাতার সাথে জঙ্গলমহলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। অবস্থান আন্দোলন প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক হতে শুরু করে দক্ষিণ পূর্ব রেলের ট্রেন চলাচল। আন্দোলন স্থগিত রাখার খবরে মুখে হাসি ফুটে জাতীয় সড়কে আটকে পড়া হাজার হাজার মানুষ। বিরোধীরা পুজোর মুখে কুড়মি সমাজের আন্দোলনে সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তির জন্য রাজ্য সরকারের অপদর্থতা ও অবহেলাকে দায়ী করছেন।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ