সুদীপ ঘোষঃ কথায় বলে “বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে”। ঘর ছেড়ে প্রকৃতির স্বাদ নিতে বাঙালি দেরি করেনা। সে দীঘা -পুরী- দার্জিলিং কিংবা সুন্দরবন বাঙালি লোটাকম্বল নিয়ে সর্বদা প্রস্তুত। তবে সময় পাল্টেছে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বাঙালির স্বাদও পাল্টেছে।
এখন প্রকৃতির মনোরম স্বাদ নিতে দূরের সাথে সাথে বাড়ির কাছের স্থান গুলিতেও ভীড় জমাচ্ছেন বাঙালি পর্যটকরা। সেই রকমই কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পর্যটকেরা প্রতিদিন বিকালে ভীড় করছেন উত্তর ২৪ পরগনার বর্তির বিলে (BortirBill)। বারাসাত- ব্যারাকপুর রোডের নিকট নীলগঞ্জ- আমডাঙা- গারুলিয়ার মাঝে অবস্থিত বর্তির বিল বর্ষা কালে মোহময়ী রূপ ধারণ করেছে। বিস্তীর্ণ এই জলাশয়ের মাঝে লাল- সাদা শালুক বা শাপলা ফুলের জঙ্গল, রাস্তার ধারে সারি সারি ছোট ছোট গাছ, কাশ ফুলের মেলা ও একের পর এক আঁশ ছড়ানো পাট আটির লাইন। নির্জন গ্রাম্য পরিবেশে এই বিলের মাঝে অসংখ্য পাখিদের ভীড় আর মাথার উপরে সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘ। কখনও মাঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি তো কখনও পড়ন্ত বিকেলের মিঠে রোদ।
এই অপরূপ সুন্দর পরিবেশের মাঝে বর্তির বিলের জলে ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় প্রতিদিন নৌকা বিহারে মেতে উঠছেন প্রকৃতি প্রেমী মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তারই ছবি। প্রতিদিন বিকালে পর্যটকদের ভীড় সামাল দিতে ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বেগ পেতে হচ্ছে আমডাঙা থানার পুলিশকে।
গত দুবছর করোনা মহামারীর কারণে ঘর বন্দী বাঙালি বাড়ির কাছে প্রকৃতির স্বাদ নিতে আবিষ্কার করে এই বর্তির বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। লকডাউনের বাঁধা শিকল হালকা শিথিল হতেই বর্ষা ও শরতের বিকালে বর্তির বিলে ভীড় করে প্রকৃতি প্রেমীরা। প্রাচীন নীলগঞ্জ খালের সাথে সংযুক্ত এই জলাধারের জল গ্রীষ্মে শুকিয়ে গেলে সেখানে চাষবাস হয় আর বর্ষার জল বাড়তেই আকর্ষণীয় রূপ ধারণ করে।
এই বিলের মুল আকর্ষণ শাপলা ফুলের জঙ্গলে ফটোগ্রাফি। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে জনপ্রিয় এই বর্তির বিল ছুটির দিন বিকালে পরিবার, ও প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে আসার অসাধারণ পর্যটন ক্ষেত্র। কলকাতার খুব কাছে এই শালুক ফুলে ভরা বর্তির বিল যেন বাংলার ডাল লেক। আর তারই মুগ্ধ করা ছবি ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্য থেকে দেশের নেটিজনদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ