বরুণ মুখোপাধ্যায়ঃ বাংলা ছবির ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টি করা ছবিগুলির মধ্যে জিৎ-প্রিয়াংকা অভিনীত ‘সাথী’ অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। বাংলা ছবিতে রাজ করে যাওয়া দু-তিনটি চেনা মুখকে দেখে দেখে বাঙালির চোখ যখন প্রায় ক্লান্ত তখনই পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীর হাতে তুরুপের তাস হয়ে টালিগঞ্জে এলেন — অভিনেতা জিৎ। অবশ্য এর পিছনেও একটা গল্প আছে।
আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে ১৪ জুন মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। ‘হিটমেকার’ হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস(এসভিএফ)-র প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছিল সাথী। ছবিটির সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন এসপি ভেঙ্কটেশ। ২০ বছর আগে মুক্তি পাওয়া সুপারহিট ছবিটির কথা দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছে এসভিএফ।
তখন পরিচালক ‘হরনাথ চক্রবর্তীর ছবি’ আর ‘হিট’ এই শব্দদুটিই ছিল সমার্থক। এর আগে ২০০০ সালে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা অভিনীত তাঁর ছবি ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ ছিল সুপারহিট। স্বভাবতই পরবর্তী ছবি সাথীতেও নায়কের চরিত্রে প্রসেনজিৎ-ই ছিলেন তাঁর প্রথম পছন্দের। কিন্তু ছবির গল্প শোনার পর কলেজ ছাত্র হিসাবে অভিনয়ে আপত্তি থাকায় প্রসেনজিতের পরিবর্তে জিতের অভিষেক ঘটে।
আরও পড়ুনঃ
- একসাথে ৫ টি কোম্পানিতে চাকরির খবর
- রাজ্যের দমকল বাহিনীতে দেড় হাজার কর্মী নিয়োগ
- CSIR এ টেকনিশিয়ান নিয়োগ
- এবার দশ লক্ষ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ হবে – ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
- একাধিক বেসরকারি সংস্থায় কর্মী নিয়োগ
প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন জিৎ। এই ছবিতে জিতের বিপরীতে অভিনয় করেন দক্ষিণ ভারতের অভিনেত্রী প্রিয়াংকা ত্রিবেদী। পর্দায় বিজয়-সোনালির চরিত্রে জিৎ-প্রিয়াংকার অভিনয় ছিল বেশ সাবলীল। এই দুই আনকোরা নতুন মুখ বাঙালির হৃদয়তন্ত্রীতে তোলে নতুন সুরের মূর্ছনা। মনোতোষ চক্রবর্তীর লেখা ছবির সংলাপ এবং এসপি ভেঙ্কটেশের সুর-সংযোজনার ঠাস বুননে বাঙালি খুঁজে পায় তার বহু আকাঙ্ক্ষিত ‘সাথী’কেই। গ্রাম বাংলার মাঠে ঘাটে প্রান্তরে লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে ‘ও বন্ধু তুমি শুনতে কি পাও’ অথবা ‘এই ভালোবাসা তোমাকেই পেতে চায়’ গানগুলি। বস্তুত, গানগুলিই ছিল এই ছবির ইউএসপি। এই ছবিতে গৌতম সুস্মিতের কথায় মোট ১১টি গান আছে যেগুলির অধিকাংশ গেয়েছেন মনু ও অনুরাধা শ্রীরাম।
শোনা যায় ২০ বছর আগে ২০০২ সালে রীতিমতো পরিকল্পনা করেই পরিচালক ছবির ‘রিলিজ় ডেট’ রাখেন ১৪ জুন। কারণ তার দু’দিন পরেই ছিল জামাইষষ্ঠী। এরপর থেকেই মোড় ঘুরে যায় ছবির। সিনেমা হলগুলিতে ভিড় বাড়তে থাকে উত্তরোত্তর। জিৎ-প্রিয়াংকার অন-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি কিংবা রঞ্জিত মল্লিক, কাঞ্চন মল্লিক, রাজেশ শর্মা, অনামিকা সাহার অভিনয় দেখতে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। হলগুলি ভরে উঠে প্রতিটি শো কার্যত ‘হাউসফুল’-এর চেহারা নেয়। সাথী ছবির মাধ্যমে সেদিন টালিগঞ্জ হাতে পেয়েছিল নতুন দুই অভিনেতা-অভিনেত্রীকে; যাদের মধ্যে একজন দু-দশক পরেও আজ সমান প্রাসঙ্গিক।
তামিল ছবির রিমেক এই ১৩৬ মিনিটের ছবি সাথী তৈরি করতে ১.৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। ছবিটির বক্স-অফিস কালেকশন হয়েছিল ৯.৮ কোটি টাকা যা ব্যবসায়িক দিক থেকে সেই সময়ের সব ধরণের বাংলা ছবিকে টেক্কা দিয়েছিল বলে মনে করা হয়। তাই বিংশ বর্ষপূর্তিতে এই ছবির স্মৃতি রোমন্থন করেছে প্রযোজক সংস্থা।
ReplyForward |