সুদীপ ঘোষঃ বাংলার প্রাচীন জনজাতির শবর সমাজ (SabarCommunity) থেকে প্রথম স্নাতকোত্তর হয়ে নজির তৈরি করলেন রমণীতা (Ramanita) । পুরুলিয়া (Purulia) জেলার প্রত্যন্ত বরাবাজারের ফুলঝোর গ্রামের গরিব আদিবাসী কন্যা সম্প্রতি পুরুলিয়ার সিধু কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়ে ইতিহাস তৈরী করেছেন।
রাজ্যে শবর জাতির পক্ষ থেকে তিনিই প্রথম মহিলা স্নাতকোত্তর। পিছিয়ে পড়া গরীব আদিবাসী সমাজের মেয়ে রমনীতা পড়াশুনায় ঝোঁক দেখে এগিয়ে আসে আত্মীয় পরিজনেরা। পুরুলিয়া লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষার পর পুরুলিয়ার কাস্তুর্ভা হিন্দি বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ডের পটমদা কলেজ থেকে ২০২০সালে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর এবছরই পুরুলিয়ার এস. কে. বি. ইউ থেকে ইতিহাসে মাস্টার ডিগ্রি।
আরও পড়ুনঃ কর্মমুখী কোর্সে ভর্তি নিচ্ছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়
বাবা একজন দিন মজুর। পরিবারের চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। শবর সমাজের দারিদ্র্যতা, বাল্যবিবাহ, শিক্ষার প্রতি অনীহা সহ একাধিক সমস্যার সাথে নানান অপমান ও লাঞ্ছনা সহ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে গেলেন রমানীতা। এবার তার লক্ষ্য অধ্যাপিকার যোগ্যতা অর্জনের নেট বা সেট পরীক্ষা এবং ইতিহাসে গবেষণা। নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া ও উন্নতি তার আসল লক্ষ্য। তার সংগ্রামে পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরুলিয়ার একাধিক প্রশাসনিক কর্তারা।
আরও পড়ুনঃ মোট ২৪১ জনের মেধা তালিকা প্রকাশ করল পি এস সি
সাফল্যে খুশি পুরুলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অধ্যাপিকরা। তাদের মতে, রমনীতার সাফল্য একটা দৃষ্টান্ত। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আদিবাসী সমাজের ছেলেমেয়েরা আরও শিক্ষার আলোয় আসবে, ফলে তাদের জনজাতির আরও উন্নতি হবে। রমণীতা শবরের সাফল্যে খুশির হাওয়া জঙ্গলমহলের শবর সমাজের মধ্যে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুরু হয়েছে রমণীতার সংগ্রাম ও সাফল্যকে কুর্নিশ জানানোর বার্তা।
(Ramanita Sabar, a girl from Purulia completed her post graduation in history. she is the first postgraduated from Sabar and wants be a teacher)