সুদীপ ঘোষঃ খেতে বসে খাবার খাওয়া শেষে খাওয়া যাবে আস্ত প্লেটও। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। খাবার খাওয়ার পাত্রও এবার খাওয়া যাবে। এমনই আশ্চর্য আবিষ্কার করেছেন কেরালার এক ব্যক্তি।
খাবার খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিক বা থার্মকলের প্লেট পরিবেশ দূষণের একটি বড় কারণ। আর সেই পরিবেশ দূষণ রোধে এবার ভোজন উপযোগী প্লেট বা থালা তৈরি করেছেন এরুনাকুলামের বিনয় কুমার বালকৃষ্ণ। ভোজ্য গমের আটার ভুষি দিয়ে তিনি এই প্লেট তৈরি করেছেন। স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু আটার ভুষি দিয়ে তৈরি এই প্লেটে খাবার খাওয়ার পরই পুরো প্লেটটি সহজেই খাওয়া যাবে। তার এই অভাবনীয় আবিষ্কারের খবর ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে।
৪৬ বছরের এই বিনয় কুমার দীর্ঘদিন মরিশাসে এক নামী বীমা কোম্পানির সি. ই. ও পদে ছিলেন। তার পর দেশের জন্য কিছু করার উদ্দেশ্য মোট টাকার চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন। পরিবেশ দূষণ রোধে খাওয়াদাওয়ার জন্য ব্যবহৃত প্লেটে প্লাস্টিক বা থার্মকলের বিকল্প রূপে তিনি নতুন ভাবনা শুরু করেন। তার পরই তিনি অব্যবহৃত গমের আটার ভুষি দিয়ে প্লেট তৈরি করার কাজ শুরু করেন।
তিন বছরের গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তিনি সহজেই ভোজন যোগ্য প্লেট তৈরি করেন এবং তার নাম দেন “তুষণ”। তার এই আবিষ্কার স্বীকৃতি দেয় তিরুবনন্দ্রমপূরমে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের সি. এস. আই. আর প্রতিষ্ঠান। তারপরই এক বেসরকারী কোম্পানির উদ্যোগে মেশিনের সাহায্যে ভোজন যোগ্য প্লেট বা থালা “তুষণ” বাজারে নিয়ে আসেন। ডিনার বা লাঞ্চ টেবিলে পছন্দ মতো খাবার খাওয়ার শেষে এই প্লেটও খাওয়া যাবে সহজেই। শুধু মানুষের ভোজন যোগ্য তা নয়, ব্যবহার শেষে এই প্লেট প্রয়োজন মতো ভেঙে গবাদি পশু, মৎস এমনকি বন্য পশুদের খাবার হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। আর ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার পর মাত্র ৩০দিনের মধ্যে সহজেই দূষণ ছাড়ায় মাটিতে মিশে যাবে এই বায়োডিগ্রেডেবিল প্লেট।
একাধিক সংস্থার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় এই ভোজন যোগ্য প্লেটের গুণমান ও বিষক্রিয়া হীনতার প্রশ্নে পাশ করেছে। এই আবিষ্কারের পর দেশে বিদেশে একাধিক পুরস্কার এখন বিনয় কুমারের ঝুলিতে। তাই এই কীর্তির খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন।