সুদীপ ঘোষঃ সপ্তাহের শুরুতেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সুখবৃষ্টির স্বাদ পেয়েছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। যদিও নিম্নচাপ অক্ষরেখা ওড়িশা হয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে মোড় নেওয়া পূর্বাভাস মতো ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়নি। তবুও কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই এই সপ্তাহে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে।
নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার ভরাকটালের জোরে বাঁধ ভেঙেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী অঞ্চলে। নিম্নচাপের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নিম্নচাপের পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। হাওয়া অফিসের মতে, আগামী শনিবার উত্তর বঙ্গোপাগরে একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ার তীব্র সম্ভবনা রয়েছে। যা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হয়ে পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিমদিকে অগ্রসর হয়ে ওড়িশা ও বাংলার দিকে আসবে। এর প্রভাবে শনিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে আবার বৃষ্টির হতে চলেছে।
তবে এই নিম্নচাপের প্রভাবে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার মতো পশ্চিমের জেলাগুলি ও এবং মেদিনীপুর ও চব্বিশ পরগনার মতো উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কলকাতা ও গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলা গুলিতে মাঝারি ধরনের বা কোন কোন স্থানে বজ্র- বিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে।
নিম্নচাপের কারণে মৎস্যজীবীদের সমুদ্র যাত্রাতে নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস। এছাড়াও হাওয়া অফিস, এই নিম্নচাপের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনকে একাধিক আগাম ব্যবস্থার নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। যেমন- উপকূলবর্তী অঞ্চলে বিপর্যয় মোকাবিলার আগাম ব্যবস্থা, বন্যা কবলিত অঞ্চলের জন্য ব্যবস্থা ও কলকাতা ও শহরতলীতে জল জমার বিরুদ্ধে আগাম ব্যবস্থা। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর, এই গভীর নিম্নচাপের কারণে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় ঝড়বৃষ্টির সময় অযথা বাইরে না যাওয়া ও বৃষ্টির সময় ধীর গতিতে গাড়ি। চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন। চাষী ভাইদের জন্য এই নিম্নচাপের কারণে প্রয়োজন মতো অগ্রিম জল নিকাশি ও আল বাঁধা, কীটনাশক ও সার প্রয়োগে অপেক্ষা করা এবং সদ্য রোপিত ধান জমি প্লাবনের হাত থেকে বাঁচানোর মতো একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এবছর বঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির অভাবে পশ্চিমের জেলা গুলির অবস্থা আরও খারাপ। ধান রোপণ ও পাট পচাতে কাল ঘাম ছুটছে কৃষকবন্ধুদের। দীর্ঘ অপেক্ষার পরই এই সপ্তাহে বৃষ্টির দেখা মেলায় খুশির হাওয়া বাংলার কৃষি মহলে। খরার কালো ছায়া ভুলে বৃষ্টিতে নতুন উদ্যমে চাষের কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। আর সপ্তাহ শেষে আবার নিম্নচাপের পূর্বাভাস পেয়ে চাষীদের মুখের হাসি আরও চওড়া হচ্ছে।