সন্তু সামন্তঃ বাংলা সিনেমা তাও আবার ১১১ দিন – কোভিড পরবর্তীতে বাংলা সিনেমার জগতে নিঃসন্দেহে ব্যবসায়িক সাফল্য দেব আর পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জুটির অনবদ্য সিনেমা ‘টনিক’ এর। তবে এই সিনেমা এবার জায়গা করে নিল আন্তর্জাতিক মঞ্চে। আজ গোয়ায় ৫৩তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (IFFI53-Tonic) এর প্যানোরামা বিভাগে প্রদর্শিত হল ‘টনিক’। সুখী হওয়ার অন্যতম রসদ ‘টনিক’ – এই বার্তাই তাকে জায়গা দিল আন্তর্জাতিক মঞ্চে।
আন্তর্জাতিক তো বটেই ! পারিবারিক সিনেমার ভাঁজে বাস্তব সংলাপের মিশেল –যা এক্স ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে দর্শকদের মনে। ছেলে পার্থ(নীল), বউমা রানি (কনীনিকা), স্ত্রী (শকুন্তলা বড়ুয়া) এবং নাতনি কে নিয়ে আর পাঁচটা পরিবারের মতই ভরাট সংসার পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে জলধর সেন এর। আপাতদৃষ্টিতে ভরাট হলেও অনেকের মতই জলধর সেন এর ও ‘বাড়িতে বউয়ের ছ্যাঁকা, ছেলের বকা, পেটের অম্বল আর রাতের কম্বলে’ সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে অবসর জীবন।
আরও পড়ুনঃ আজ থেকে হাওড়া ডিভিশনে ট্রেন নিয়ন্ত্রণ, জেনে নিন ট্রেনের সময়সূচী
আর পাঁচটা পরিবারের মতই সেন পরিবারেও বৃদ্ধ বাবা মায়ের বিবাহবার্ষিকী পালন করার তোড়জোড় চলে বাড়িতেই। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে নিজেদের মত করে বিবাহবার্ষিকী পালন করার ইচ্ছে অনেকের থাকলেও সংসারের ঘেরাটোপে অনেক আনন্দই আর পূর্ণ হয়ে ওঠে না। ভাঁটা পড়ে উৎসাহে। জীবন যখন কার্যত পানসে, তখনই জলধর সেন এর সঙ্গে পরিচয় হয় ট্রাভেল এজেন্ট ‘টনিক’ ওরফে দেব এর সঙ্গে। আর তারপরই সিনেমার ছত্রে ছত্রে রয়েছে জীবনকে উপভোগ করার জিয়নকাঠি।
নিত্যদিনের সাংসারিক রোজনামচার গণ্ডি পেরিয়েও যে ভালো থাকা যায়, নিজেদের মত করে বাঁচা যায়,খুব বেশি না হলেও ছোটো ছোটো আনন্দ এভাবেও যে উপভোগ করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছে ‘টনিক’। স্বপ্নপূরণের ইচ্ছে কে বাঁচিয়ে রাখতে সবারই প্রয়োজন হয় এমন একজন ‘টনিক’ এর। এক কথায় জীবনকে নতুন আঙ্গিকে ভাবতে শিখিয়েছে এই ‘টনিক’। সুখী জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেকেরই চাই বিশেষ অবলম্বন যা এককথায় ‘টনিক’; তবে তা শরীরের নয়, মনের ওষুধ।
গোয়ায় আইএফএফআই-এর (IFFI53-Tonic) ‘টক টেবিল’ সেশনে আজ উপস্থিত ছিলেন পরিচালক অভিজিৎ সেন এবং টনিক ওরফে অভিনেতা দেব। এই ছবির মূল বিষয় হল সুখী জীবনযাপনের স্বার্থে প্রত্যেক ব্যক্তির অবলম্বন প্রয়োজন। আর এই জন্যই তিনি এর নামকরন করেছেন ‘টনিক’; জানিয়েছেন সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (এসআরএফটিআই)-এর স্নাতক পরিচালক অভিজিৎ সেন।
অভিনেতা দেব এর কথায়, বর্তমান প্রজন্ম অতিরিক্ত সচেতন হতে গিয়ে বাবা মায়েদের ইচ্ছে, আশা আকঙ্খা কেই উপেক্ষা করেন, যা এই সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই ছবিটি গত বছর কোভিড পরবর্তী সময়ে টানা ১১১ দিন বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হয়েছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে খুব কম ছবিই এই সাফল্য পেয়েছে। ওটিটি-র মাধ্যমে ভারতীয় আঞ্চলিক ছবিগুলিও যে আন্তর্জাতিক দর্শক পেয়েছে, তা ওই মঞ্চে জানিয়েছেন অভিনেতা দেব।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ