সুদীপ ঘোষঃ সামনেই কালীপুজো। দীপাবলীর আলোর উৎসবে ভাসতে চলেছে বাংলা সহ সারা দেশ। তাই মাটির প্রদীপ তৈরির ব্যস্ততা এখন বাংলার মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে। নাওয়া খাওয়া ভুলে চাকার উপর হাত লাগিয়ে চলছে মাটির প্রদীপ তৈরির কাজ।
সময় পাল্টেছে, বাজার এখন ভরে গেছে চীনা বাতি ও ইলেকট্রিক লাইটে। কদর কমেছে মাটির প্রদীপের। তবু দীপাবলী এলে আবার আশায় বুক বাঁধে বাংলার কুমোর পাড়ার মানুষেরা। কারণ এই আধুনিক চীনা বাতির মাঝেও এখনও চাহিদা আছে মাটির প্রদীপের। শুধু কালীপুজো নয় দুর্গাপুজো থেকেই মাটির তৈরি প্রদীপ, ঘট, ধুনুচি, ভাঁড়, গামলা ও হাঁড়ির চাহিদা বাড়তে থাকে। তাই বর্ষার দাপট কমলেই ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় বাংলার মৃৎ শিল্পীদের। তবে মুল আকর্ষণ থাকে কালীপুজোর দিকে।
দীপাবলীর আলোর উৎসবে ব্যাপক চাহিদা থাকে মাটির প্রদীপের। মালদা , কলকাতার কুমোরটুলি, হাওড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, নদীয়া, চব্বিশ পরগনা, বীরভূম ও হুগলির মৃৎ শিল্পীরা তাকিয়ে থাকে শক্তির আরাধনা কালীপুজোর দিকে। তাদের তৈরি প্রদীপ কলকাতা ও তার শহরতলী ছড়িয়ে বাইরের রাজ্যেও পৌঁছে যায়। এক একজন শিল্পীর কালীপুজোতে ২০-২৫ হাজার মাটির বাতির অর্ডার পান।
তবে আগের থেকে চাহিদা দিন দিন কমছে। গত দুই বছর কোভিডের কারণে চাহিদা একেবারে বারে তলানিতে ঠিকেছিল। তৈরির খরচের সাথে বাজারে মূল্যের পার্থক্য খুবই কম। সঠিক দাম না মেলায় আর কতদিন যে এই প্রাচীন শিল্প চালিয়ে যেতে পারবেন তা নিয়েও দোলাচলে রয়েছেন কুমোর পাড়ার মানুষ জন।
বিশেষজ্ঞের মতে, সরকারি সাহায্য, বাজারে সরবরাহ ও সরকার মারফত অর্ডার পেলে আবার প্রাণ ফিরে পাবে এই মাটির শিল্প। এই শিল্পের সাথে যুক্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ আবার লাভের মুখ দেখবে। শুধু উৎসবের দিন গুলি নয়, সারাবছরই যাতে বাংলার এই অন্যতম কুটির শিল্পের চাহিদা থাকে তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সরকার ও সাধারণ মানুষকে। প্লাস্টিকের বদলে মাটির জিনিস এবং চীনা বাতির বদলে মাটির প্রদীপ ব্যবহার বাড়লেই হাসি ফুটবে মৃৎ শিল্পীদের। তাই কালীপুজো সামনে রেখেই তারা নিজেদের সংসার আলোতে ভরানোর স্বপ্ন দেখছেন। একটু বেশি রুজি রোজগারের স্বপ্নেই চরম ব্যস্ততা এখন মাটির প্রদীপ তৈরির শিল্পীদের।
| Diwali 2022 | Bengal’s potters are busy with making clay diyas |
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ