মৌপিয়া মাইতিঃ “মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে” – দেশ, কাল পাত্র ভেদে এই কথাটি প্রযোজ্য। আর যিনি এই গানের স্রষ্টা তিনিও দেশ কালের সীমানা অতিক্রম করেছেন। আর তাইজন্য ভূপেন হাজারিকার (Dr. Bhupen Hazarika) জন্মদিনে বিশেষ ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করল গুগল ডুডল (গুগ্লে দুদলে)। গায়কের ৯৬ তম জন্মদিন উপলক্ষে সার্চ ইঞ্জিন গুগল তার প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে একটি সুন্দর রঙিন ডুডুলের মাধ্যমে। ডুডুলটি ভূপেন হাজারিকারই ছবি।
না শুধু গায়ক নন, তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন কবিতা, চলচ্চিত্র ও সুরকার জগতেও। ভারতে জন্ম হলেও বাংলাদেশেও তাঁর জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মত ছিল। অর্জন করেছেন ভারতের অন্যতম সেরা ৪ টি সম্মানে – ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী। বিবিসি বাংলার বিচারে সর্বকালের সেরা ২০ টি গানের মধ্যে তাঁর গাওয়া “মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে” দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।
মাত্র ১০ বছর বয়সেই গানের সুর দেওয়াতে হাতেখড়ি। মাত্র ১২ বছর বয়সে আসামি চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার সুযোগ পান। আসাম এবং উত্তরপূর্ব ভারতের লোকগান ও সংস্কৃতিকে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ভুপেন হাজারিকার থেকেও মানুষের কাছে বেশি পরিচিত সুধা কণ্ঠ নামে। আমি এক যাযাবর, সাগর সঙ্গমে, হে দোলা হে দোলা, গঙ্গা আমার মা, বিস্তীর্ণ দুপারে র মত কয়েকশ গান ৮ থেকে ৮০ সবার কাছেই শ্রুতিমধুর।
অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন দিকপাল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করার পর নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে কিছুদিন অল ইন্ডিয়া রেডিও তে কাজ করেন। তারপর গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতার কাজও করেন। শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে ছলে আসেন কলকাতায়। মিউজিক ডিরেক্টর ও গায়ক হিসেবে সেই সময় নিজস্বতার স্বাক্ষর রেখেছেন বাংলা ও আসামি সিনেমায়। ১৯৬৭ সালে রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ। নবইচার নির্বাচিত বিধায়ক হন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টির সক্রিয় সদস্যও ছিলেন।
এহেন বর্ণময় ব্যক্তিত্বর প্রয়াণ হয় ২০১১ সালে। লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় তার শেষযাত্রা।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ