সুদীপ ঘোষঃ পিছিয়ে পড়া রুক্ষমাটির দেশ পুরুলিয়া (Purulia) এখন পর্যটকদের পছন্দের প্রথম সারিতে। সপ্তাহের ছুটিতে সারাবছরই ভীড় বাড়ছে সমস্ত প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে।
আরও পড়ুনঃ বর্ডার পুলিশে কর্মী নিয়োগ
করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়, পাখি পাহাড়, ময়ূর পাহাড়, গড়পঞ্চকোট, ডোলাডাঙ্গা,দেউলঘাটা, বাঘমুন্ডি, জয়চান্ডিপাহাড়, বারান্তী ড্যাম ও মার্বেল লেক ইত্যাদি পর্যটন স্থান গুলি কলকাতা সহ রাজ্যের অন্য জেলার পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এরই মাঝে রাজ্যের পর্যটন শিল্পে জায়গা করে নিয়েছে পুরুলিয়ার দুয়ারসিনি (Duarsini Jungle) ফরেস্ট। এই অফবিট পর্যটন কেন্দ্রেও ক্রমেই আনাগনা বাড়ছে পর্যটকদের। পুরুলিয়ার জেলার ঝাড়খণ্ড সীমান্তের বান্দোযান ও মানবাজার ব্লকের মাঝে অবস্থিত এই নতুন পর্যটন কেন্দ্র। ঝাড়খণ্ডের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ঘাটশিলা ও গালুডি ড্যামের খুব কাছেই এই দুয়ারসিনি জঙ্গলের শাল, সেগুন, মহুয়া ও সোনাঝুরি ইত্যাদি গাছের মাঝেই গড়ে উঠেছে টুরিস্ট স্পট। সাঁওতাল, খেরিয়া, মুন্ডা ও শবর নামক একাধিক আদিবাসী জনজাতির মাদলের শব্দে ভরে উঠছে শত শত পর্যটকদের মন। এই দুয়ারসিনি টুরিস্ট স্পটের মূল আকর্ষণ ছোট মারাংগুরু পাহাড়, শান্ত পাহাড়িয়া সাতগুদুম কল্লোলিনী, দুয়ারসিনি মন্দির, ভেষজ গাছে ভরা ভালো পাহাড় ও সানসেট ভিউ পয়েন্ট।
আরও পড়ুনঃ জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াতে নিয়োগ
দুয়ারসিনি জঙ্গলের মাঝেই রাজ্যের বনদপ্তরের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্র বা বনবাংলো। জঙ্গলের মাঝের এই বনবাংলোর জানালা বা ব্যালকনি থেকেই দেখা মেলে শিয়াল, বন শুয়োর, হায়না, বানর,ভালুক, হরিণ ও ময়ূর। বছরের অনেক সময় এই জঙ্গলে দর্শন পাওয়া যায় দলমা হাতির দলকে। সবুজ জঙ্গলে ঘেরা দুয়ারসিনির শান্ত আকাশ- বাতাস সব সময় অসংখ্য পাখির ডাকে মুখরিত। গ্রীষ্মের উত্তাপ কমতেই দুয়ারসিনিতে শুরু হয়েছে পরিবার ও বন্ধু- বান্ধব নিয়ে পর্যটকদের আসা যাওয়া। এই মনোরম স্থান পর্যটন শিল্পের স্থান পাওয়ায় ঐ অঞ্চলের মানুষের আর্থিক অবস্থারও উন্নতি ঘটতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ স্বপ্নের বাড়ি বাঁচাতে অদ্ভুত উপায় কৃষকের, ভাইরাল ভিডিও
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এই দুয়ারসিনি পরিচয় বাড়তেই বেসরকারি উদ্যোগেও রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠতে শুরু করেছে। পর্যটন শিল্পের উন্নতির ফলে স্থানীয় পিছিয়ে পড়া মানুষের কাঠ- বাঁশ, শাল পাতা, মাটি ও পাথর দিয়ে তৈরী কুটির শিল্পও লাভের মুখ দেখছে। জঙ্গলের মাঝে আদিবাসী নাচে মন ভরিয়ে নিচ্ছেন শহুরে পর্যটকরা। বাড়ছে গরীব আদিবাসী শিল্পীদেরও রুজি রোজগার।
আরও পড়ুনঃ কয়েক হাজার শূন্যপদে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগ
এই অবস্থায় সরকারি উদ্যোগে দুয়ারসিনির পরিচয় বাড়ানো, যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতি, নিরাপত্তা বাড়ানো, কুটির শিল্পের মেলা ও আরও সরকারি- বেসরকারি রিসোর্ট তৈরির দাবি করছেন স্থানীয় মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে , এই অঞ্চলে পর্যটন শিল্পে আরও উন্নতি ঘটলে এই অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী মানুষের জীবনযাত্রার মানের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। দুয়ারসিনিতে পর্যটন শিল্পের আরও উন্নতি ঘটলে ঝাঁকে ঝাঁকে পর্যটকরা ছুটে আসবে এই সবুজে ঘেরা নির্মল পরিবেশের স্বাদ নিতে।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন খবরের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সবার আগে জানতে লাইক ও ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও গুগল নিউজ